বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২১
০৪ থেকে ১০ অক্টোবর
শৈশবকালীন শিশুর মানসিক বিকাশ
শিশু বাবা-মা ও রাষ্ট্রের সম্পদ। তারা আগামীদিনে সুনাগরিক হবে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী সকলেই শিশু। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ এ সনদ অনুমোদন করে। শিশুর জন্য দরকার গুড প্যারেন্টিং। লক্ষ রাখতে হবে আপনার শিশুর মানসিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছে তো। শিশুর বিকাশকে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা যায়। আজকের আলোচনার বিষয় শৈশবকালীন শিশুর মানসিক বিকাশ। যার ব্যাপ্তিকাল ২ বছর প্লাস থেকে ১২/১৩ বছর।
১. বিনিয়োগ চাই : ‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়টি যথার্থ হয়েছে। কোনো কিছু অর্জন করতে চাইলে বিনিয়োগ অবশ্যই চাই। এখানে বিনিয়োগ করতে হবে- শ্রম, নিষ্ঠা, অর্থ, নৈতিকতা, সময়। যা দ্বারা শিশু ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে পারবে, নিয়মানুবর্তিতা, বড়দের সম্মান, একে অপরকে শ্রদ্ধা করতে শিখবে। আমাদের এখানে ন্যায়-অন্যায়, নৈতিকতা, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বর্তমানে ঠোঁটসেবা হিসেবে চর্চা করা হয়। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সত্য ও সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এগুলো অনুশীলন করার বিষয়। শুধু পুস্তকে থাকলে চলবে না। প্রাথমিক শিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগ দরকার। বিভিন্ন ধরনের ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। যেমন- ছবি আঁকা, প্রকৃতি পাঠ, সংস্কৃতিচর্চা, উপস্থাপন, আবেগ প্রশমন, মনোসামাজিক ক্লাব।
২. সময় দিন : শিশুকে গুণগত সময় দিতে হবে। তার সাথে গল্প হবে ও সময় ব্যয় করতে হবে। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে কী বলতে চায়? আপনি হয়তো ল্যাপটপে কাজ করছেন এমন সময় মেয়ে এসে বললো বাবা আমাকে রান্নাঘর থেকে কলাটা এনে দাও তো। আমাকে কেমন লাগছে? চশমাটা কেমন? এ বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করতে ও ইতিবাচকভাবে সাড়া দিতে হবে।
৩. আপনার বাড়ির পরিবেশ : শিশু অনুকরণ প্রিয়। আপনি যে বিষয়টি নিষেধ করবেন বা করতে বলবেন সেটি অনেকসময় না করলেও পিতামাতার আচরণ দ্বারা শিশু প্রভাবিত হয়। তার সমনে এমন আচরণ করবেন না যাতে শৈশবকালীন স্মৃতিতে খারাপ ইফেক্ট ফেলে। পারতপক্ষে আপনার সন্তানের সামনে ঝগড়া-বিবাদ বা বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্বে জড়াবেন না। স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে লাভ এন্ড রেসপেক্ট বা সম্মান করবেন। কারণ আপনাদের এ আচরণ পরবর্তীতে তাকে অন্যকে সম্মানিত ও আঘাত করতে ভূমিকা রাখবে।
৪. বেড়াতে যান : শিশুরা বাসায় বসে থাকতে থাকতে অস্বস্থি বোধ করতে পারে। প্রয়োজনে বাসার ছাদে, পার্কে যান। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মন ভালো থাকে। এছাড়া বিভিন্ন দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক জায়গায় সফর করতে পারেন। যাতে তার মধ্যে একঘেয়েমি বা ক্লান্তি সহজেই দূর হয়ে যায়। করোনাকালীন ডিপ্রেশন ও উদ্বেগ দূর করতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
৫. পড়ার অভ্যাস : বই পড়া অভ্যাসের ব্যাপার। ইউনিসেফ বলেছে, বই পড়ে শিশুর ভাষাগত দক্ষতা বাড়ে, শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়। অজানাকে জানা, অদেখাকে মনের চোখে দেখার সুযোগ তো থাকছেই। ধুমধারাক্কা গেম, টেলিভিশনের পর্দা, স্মার্টফোনে আসক্ত হলে শৈশব হবে অস্থির, খিটমিটে। বইয়ের স্পর্শ শিশুকে করবে অনুভূতিপ্রবণ ও আবেগীয় গুণসম্পন্ন। বই পড়ে শোনান মজা করে, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন করে ও খানিকটা অঙ্গভঙ্গিতে শিশুকে আকৃষ্ট করুন। গেমিং সামগ্রী প্রায়ই না কিনে দিয়ে বরং নতুন নতুন বই কিনে দেন।
৬. খেলাধুলা : খেলাধুলাও শিশুর মানসিক বিকাশে অবদান রাখে। খেলার মাঠে, বাড়ির আঙ্গিনায়, বাসার পাশে খেলতে দিন। এতে সে অন্যদের সাথে মেশার সুযোগ পায়। বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায় ও সহানুভূতি তৈরি হয়। ফলে সামাজিক বিষয়গুলো অর্জন করতে শিখবে। খেলার মাধ্যমে শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে শরীর ও মন উভয়ই চাঙ্গা থাকে।
৭. তুলনা করা বন্ধ করুন : রাশেদ বৃত্তি পেয়েছে। ফরিদ রোল এক করেছে। তোমাকেও রাশেদের মতো হতে হবে। এ ধরনের কথা আপনার শিশুকে কখনোই বলবেন না। তাকে বলবেন তোমাকে ভালো মানুষ হতে হবে। ভালো ফলাফল করতে হবে। তুলনা করলে শিশুর মধ্যে উদ্বেগ ও হীনমন্যতা তৈরি হয়। ফলে ঐ টার্গেট বা বাবা-মার কথা অনুসারে সে যদি ওই ধরনের ফলাফল করতে না পারে, তবে তার মধ্যে মানসিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেক শিশু স্বতন্ত্র। এমনকি যমজ সন্তানের মধ্যেও স্বাতন্ত্র্যবোধ লক্ষণীয়।
৮. কাজের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস : আপনার শিশুকে দায়িত্ব দিন। তাতে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। পড়ার ব্যাগ গোছানো, নিজের কাপড় ঝুড়িতে রাখা, আপনি যখন রান্না করেন তখন তরকারির ডালা, বাটি ও চামচ ইত্যাদি এগিয়ে দেওয়া। এর ফলে শিশু নিজেকে বাড়ির গৌরবান্বিত সদস্য মনে করে।
৯. কৌতুহল : শিশুরা অনেক বেশি কৌতুহলী বা কৌতুহল প্রিয়। তারা সবসময় প্রশ্ন করে। জানতে চায়। এটা কী? ওটা কী? কেন হয়? এ সময় তাদের ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলে চলবে না। বিরক্ত হওয়া যাবে না। বুঝিয়ে বলতে হবে। যথাযথভাবে উত্তর দিতে হবে। ফলে তারা আশাবাদী হয়। কৌতুহল থেকেই কোনোকিছুর উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশ লাভ করে।
১০. গ্যাজেট : স্মার্টফোন, ট্যাবসহ অন্যান্য গ্যাজেটের ব্যবহার সীমিত রাখতে হবে। ডিভাইসে আসক্তি তৈরি হলে তার আচরণ অস্বাভাবিক হয়ে যায়। অনেকে বাচ্চাকে স্মার্টফোন দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করে। এটি বিপজ্জনক প্রক্রিয়া। কারণ কিছুদিন পর আর এই প্রযুক্তি ছাড়া খাবার গ্রহণ করবে না। গ্যাজেটের ব্যবহার কমাতে বাচ্চার সাথে এ ধরনের চুক্তি করা যেতে পারে যদি তুমি ড্রইংটা কর তবে তোমাকে ৩০ মিনিট ফোনে কার্টুন দেখতে দিব। স্কুল পড়ুয়া শিশুরা প্রয়োজনমতো যন্ত্র ব্যবহার করবে। তবে সময়সূচি অভিভাবকদের জানা থাকা দরকার।
১১. স্পর্শ : শিশুকে নিরাপদ ও অনিরাপদ স্পর্শ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। বাবা-মাকে অন্য কারও কাছে বাচ্চাকে ছাড়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে। তার ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর অঙ্গ কোনটি তা বুঝিয়ে দিতে হবে। কেউ যদি তোমার ওই বিশেষ অঙ্গে স্পর্শ করে বা হাত দেয় তবে সে যেন না লুকিয়ে প্রকাশ করে। গুড ও ব্যাড টাচের ধারণা যদি না থাকে তবে শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে। এমনকি ছেলে শিশুও অনিরাপদ স্পর্শের সম্মুখীন হতে পারে। পক্ষান্তরে মা-বাবা, ভাই-বোন শিশুকে যদি আদর করে, চুমু খায়, বুকে জড়িয়ে ধরে তবে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস, ভালোবাসা তৈরি হয়।
১২. পুরস্কার : পুরস্কার শিশুকে ইতিবাচক আচরণে উৎসাহিত করে। যা তাকে লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে। ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় পুরস্কারই দেওয়া যেতে পারে। যেমন- শিশু যদি পড়া না করে তবে তাকে কিছুক্ষণের জন্য ঘরে আটকিয়ে রাখা যেতে পারে। আমরা সবসময় পজিটিভ রিইনফোর্সমেন্টের (পুরস্কার) দিকে বেশি জোর দিব। যেমন- তুমি যদি এ ঔষধ বা খাবারটি খাও তবে তোমাকে পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাব। আবার তুমি যদি বাবা-মার কথা শোনো তাহলে তোমাকে একটি নতুন ড্রেস কিনে দিব।
১৩. স্কুল ভীতি : বিভিন্ন কারণে শিশুর মধ্যে স্কুল ভীতি তৈরি হতে পারে। সহপাঠী বা সঙ্গীদের কটাক্ষ, বড়ি শেমিং, বন্ধুদের অপমান, শিক্ষকদের কড়া শাসন, পরীক্ষায় ভালো করতে না পারা, সার্বিক আবহ। বিদ্যালয়ের পরিবেশ হতে হবে আনন্দদায়ক। তারা হেসে খেলে যাতে শিখতে পারে এ ব্যবস্থা করা দরকার। সরকার শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করেছে যা ভালো উদ্যোগ। আঁকাআঁকি, গল্পের ছলে চিত্তাকর্ষকভাবে এনিমেশনের মাধ্যমে শিক্ষাদান করতে হবে। কথায় বলে একটি ছবি একশ কথার এবং একটি ভিডিও হাজার কথার সমান।
১৪. সমস্যায় পড়লে : বাস্তব জীবনে দেখেছি বিশেষ করে শহরের সন্তানদের বাবা-মা সবকিছু করে দেয়। ফলে তারা পরনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠে। এতে শুধু পরীক্ষার ফলাফল ভালো হতে পারে। সার্বিক বিচারে তা ভালোকিছু বয়ে আনে না। কিন্তু সামান্যতম সমস্যায় পড়লে সে বিচলিত হয়ে পড়ে। শিশুকে সামাজিক দক্ষতার ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া শিখতে হবে। তাকে এমন করে গড়ে তুলতে হবে যাতে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে ও দৈনন্দিন সমস্যাগুলো সুনিপুণভাবে সমাধান করতে পারে। এতে কোনো সময় ভুল হতেই পারে তাতে সমস্যা নেই। তেরো বছরের শিক্ষকতা জীবনে দেখেছি এমনকি দশম ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও মা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া-আসার দায়িত্ব পালন করে। সামাজিক দক্ষতা বা আচরণ শিশুকে ভবিষ্যতে চাপমুক্ত রাখবে। এজন্য সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে হবে। সফলতা, ব্যর্থতাকে উদযাপন করতে জানতে হবে। বিকল্প চিন্তা, সমনে কোনো সমস্যা এলে তাকে সমাধানের সুযোগ করে দিতে হবে।
১৫. শিক্ষাক্রম : ২০২৩ সাল থেকে যে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে সেখানে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা রাখা হয়নি। এটি খুবই ভালো দিক। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা মাসিক চাপ থেকে ও কোচিং, প্রাইভেটের আবশ্যকতা থেকে মুক্ত থাকবে। শিশুরা হেসে খেলে শিখবে। এসময় বাচ্চাদের বিভিন্ন বিকাশ ঘটে বিশেষ করে নৈতিক ও মানসিক বিকাশ। শৈশবকালটা আনন্দে কাটবে যা ইতিবাচক বিকাশে সাহায্য করবে। তাছাড়া বয়স, মেধা অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক নির্ধারণ জরুরি। শিক্ষাক্রমের মৌলিক ভিত্তি হওয়া উচিত শৈশব কাটবে আনন্দে। অর্থাৎ খেলারছলে আনন্দ-বিনোদনের মাধ্যমে পাঠদান।
১৬. একাধিক সন্তান : পরিবারে শিশু একাধিক হলে বাবা-মাকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। প্রথম সন্তান পালনে যে ভুল-ভ্রান্তি ছিল তা দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে করা যাবে না। এসময় দম্পতিরা অনভিজ্ঞ থাকে। তাছাড়া প্রবীণ ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পর স্বভাবতই প্রথম সন্তান ঈর্ষা, হিংসা ও আক্রমনাত্মক আচরণ করতে পারে। এজন্য তাকে জানাতে হবে সামনে তোমার ভাই বা বোন আসছে। অধিকন্তু বড় সন্তানকে বাসার কোনো ছোট ছোট কাজে লাগানো যেতে পারে। যেমন- মাকে ভাতের গামলা এগিয়ে দেওয়া, গ্লাসে পানি ঢেলে দেওয়া ইত্যাদি। এতে সে বুঝতে পারবে বাবা-মার কাছে বা পরিবারে তার গুরুত্ব আছে। দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানে প্রথম সন্তানকে অবহেলা করা যাবে না। বড় সন্তানকে আদর কম করাও উচিত নয়। দুটি/তিনটি সন্তান যখন একই স্কুলে পড়বে তখন ছোট সন্তানের ছুটি হলে তাকে তার ভাই বা বোনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার বাবা-মা শিশুকে নিতে যেতে দেরি করতে পারে এতে অস্থিরতা, নিরাপত্তাহীনতা, ও উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।
১৭. আবেগীয় বিকাশ : আবেগ হচ্ছে আলোড়িত বা উত্তেজিত অবস্থা। ই বি হারলক বলেছেন, শিশুর বয়স এক বছর হলে আবেগপ্রাপ্ত বয়স্কদের অনুরূপ হয়ে থাকে। প্রাক-শৈশবকাল থেকেই শিশুর মধ্যে ভালোবাসার মতো আবেগের প্রকাশ দেখা যায়। সন্তান পিতা-মাতাকে, ভাই-বোনকে, বন্ধুকে ভালোবাসে। শৈশবের শেষ পর্যায়ে আশ্চর্যবোধ লক্ষ করা যায়। আশাতীত কোনো বস্তু প্রাপ্তি, অকল্পনীয় কোনো বিষয় এ ধরনের আবেগ সৃষ্টি করে। ঘৃণা, আগ্রহ বা কৌতুলল, ভয়-ভীতি, ক্রোধ বা রাগ, আনন্দের মতো আবেগগুলোও শৈশবে বিকাশ লাভ করে। তাই এ পর্যায়ে শিশুর লালন পালনে বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
১৮. জ্ঞানীয় বিকাশ : জ্ঞানীয় বিকাশ বলতে বুদ্ধির বিকাশকে বুঝানো হয়। এ সময়ে শিশু কোনোকিছুর সমস্যা সমাধান করতে শিখে। ভাষার ও শব্দের বিকাশ হয়। শিশুর বুদ্ধির বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশ উভয়ই ভূমিকা রাখে। কে তার মা-বাবা, মা রাগ করে না স্বাভাবিকভাবে কথা বলছে তা বুঝতে পারে। এসময় সংখ্যা, ছোট-বড় ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা লাভ করে। বিভিন্ন প্রাণী ও বস্তু সম্পর্কে পার্থক্য করতে পারে। কোনো বস্তু বা কোনোকিছু লুকিয়ে রাখলে খুঁজে বের করতে পারে। আবার কোনোকিছু স্পর্শ করে, দেখে, নাড়াচাড়া করে ওই বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে।
সন্তান পালনে মাইকেল মিচেলের নির্দেশিকা ফলো করা যেতে পারে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক দুটি সত্ত্বা। মানসিক বিষয়টি কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত হবে না। আজ যে শিশু ভবিষ্যতে সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়ে বয়োবৃদ্ধ হবে। তাকে জীবন ব্যাপ্তিকালে বিভিন্ন স্টেজে বিভিন্নরকম দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই শিশুর বিকাশ যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় তবে দেশ তার ভালো আউটপুট থেকে বঞ্চিত হবে।
লেখক : এম জয়নুল আবেদীন, শিক্ষক ও সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলর
e-mail : [email protected] , মোবাইল : ০১৭১৮ ৭৮৭১৩১